ঢাকা , রবিবার, ০৩ অগাস্ট ২০২৫ , ১৮ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ফেইক আইডির দাপটে কালীগঞ্জ ভুয়া ফেসবুক আইডি খুলে অপপ্রচার, ব্ল্যাকমেইলিং ও সম্মানহানির অভিযোগ।


আপডেট সময় : ২০২৫-০৮-০২ ১৮:৪২:১৯
ফেইক আইডির দাপটে কালীগঞ্জ ভুয়া ফেসবুক আইডি খুলে অপপ্রচার, ব্ল্যাকমেইলিং ও সম্মানহানির অভিযোগ। ফেইক আইডির দাপটে কালীগঞ্জ ভুয়া ফেসবুক আইডি খুলে অপপ্রচার, ব্ল্যাকমেইলিং ও সম্মানহানির অভিযোগ।


তৈয়বুর রহমান (কালীগঞ্জ) গাজীপুর।     

গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভুয়া (ফেইক) আইডি খুলে সম্মানিত ব্যক্তি ও বিভিন্ন পেশাজীবীদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার, হয়রানি ও ব্ল্যাকমেইলিংয়ের ঘটনা বেড়েই চলেছে। শুধু সম্মানিত মানুষই নয়, প্রতারণা ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন সমাজের সব স্ত-রের লোকজন।     

একাধিক স্থানীয় সূত্র জানায়, রাজনৈতিক বিরোধ, ব্যক্তিগত প্রতিহিংসা, ব্যবসায়িক দ্বন্ধ ও মাদকের আধিপত্য ঘিরেই গড়ে উঠেছে একটি সংঘবদ্ধ চক্র। এরা নিজেদের পরিচয় গোপন রেখে ফেসবুকে ভুয়া আইডি খুলে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষের বিরুদ্ধে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য, মিথ্যা অভিযোগ ও বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়াচ্ছে।     ২০২৪ সালের রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর স্থানীয়ভাবে একদল অজ্ঞাত চক্র এসব কর্মকাণ্ডে আরও সক্রিয় হয়ে উঠেছে।

আগে দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকা রাজনৈতিক দলের আধিপত্য থাকায় প্রতিপক্ষ দলগুলো মাঠে তেমন সক্রিয় ছিল না। কিন্তু পালাবদলের পর থেকেই রাজনৈতিক বিরোধের পাশাপাশি ব্যবসায়িক দ্বন্ধও প্রকট হয়েছে। এসব দ্বন্ধই এখন ফেসবুকের ভুয়া আইডির মাধ্যমে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার হাতিয়ার হয়ে উঠেছে।     

চক্রটি ব্যবসায়ী, শিক্ষক, রাজনীতিক ও স্থানীয় সাংবাদিকদেরও টার্গেট করছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এসব ভুয়া আইডিতে প্রায়শই সুন্দরী নারী বা হ্যান্ডসাম পুরুষের ছবি থাকে, যার অধিকাংশই গুগল থেকে নেওয়া। অনেক সময় ছবি ছাড়াও ভুয়া নাম ও পরিচয়ে চালানো হয় এসব আইডি। বিশেষজ্ঞদের মতে, এসব কার্যক্রমের পেছনে তরুণদের একটি বড় অংশ জড়িত। ২০২২ সালের জনশুমারি অনুযায়ী, কালীগঞ্জ উপজেলার জনসংখ্যা প্রায় ৩ লাখ ১১ হাজার।

এর মধ্যে অর্ধেকেরও বেশি মোবাইল ফোন ব্যবহার করেন, যাদের মধ্যে অনেক তরুণের হাতে রয়েছে স্মার্টফোন। তাদের মধ্যে কেউ কেউ গোপনে ফেক আইডি খুলে অবাধে চলাফেরা করছে।     

অপরাধ বিশ্লেষকরা বলছেন, ফেসবুকের মতো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম একদিকে যেমন বন্ধুত্বের সুযোগ করে দিচ্ছে, অন্যদিকে একে ব্যবহার করে প্রতারণা, হয়রানি ও মানহানির মতো গুরুতর অপরাধ চালানো হচ্ছে। তারা মনে করেন, ফেক আইডি খোলা নিজেই একটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এছাড়া এসব আইডিতে ক্ষতিকর পোস্ট, ভিডিও, ছবি বা গুজব ছড়ানো, লাইক, শেয়ার ও মন্তব্য করা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে শাস্তিযোগ্য। 

একাধিক স্থানীয় নাগরিক জানান, বর্তমানে ফেসবুকের ভুয়া আইডি যেন এক আতঙ্কে পরিণত হয়েছে। এমনকি এসব আইডির ভয়ে কেউ কেউ সামাজিকভাবে বিচ্ছিন্ন জীবনযাপন করছেন।

কালীগঞ্জে কর্মরত এক গণমাধ্যমকর্মী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “একটি সংঘবদ্ধ চক্র এসব ভুয়া আইডি ব্যবহার করে সাংবাদিকসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষকে টার্গেট করছে। আমরা বিটিআরসির মাধ্যমে এসব ব্যবহারকারীকে চিহ্নিত করে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাই।”     

বিশেষজ্ঞ ও স্থানীয় প্রশাসনের মতে, এই সমস্যা সমাধানে চাই ভুক্তভোগীদের লিখিত অভিযোগ, আইসিটি বিভাগের প্রযুক্তিগত সহায়তা এবং সর্বোপরি সামাজিক সচেতনতা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারীদেরও হতে হবে সচেতন ও দায়িত্বশীল।     

কালীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আলাউদ্দিন বলেন, আমরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভুয়া আইডি ব্যবহার করে অপপ্রচার ও হয়রানির বিষয়টি জানি।

ইতিমধ্যে কয়েকটি সন্দেহভাজন আইডি নজরদারির আওতায় রয়েছে। কালীগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামান বলেন, আইসিটি বিভাগ ইতিমধ্যে ভুয়া আইডি শনাক্তে কাজ করছে।





 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Banglar Alo News Admin

কমেন্ট বক্স

প্রতিবেদকের তথ্য

এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ